অভিনেত্রীদের গোপন তথ্য- ড্রাইভার, ব্যক্তিগত সহকারী, কাজের লোক এমনকি ফ্ল্যাটের দারোয়ানের মাধ্যমে ফাঁস হয়ে যাচ্ছে নায়িকা-গায়িকাদের গোপন তথ্য। উঠতি- জনপ্রিয় শিল্পীরা কে-কখন-কোথায় অবস্থান করছেন তা জেনে নিয়ে রীতিমতো তাদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিচ্ছেন কিছু প্রভাবশালী।
বিদেশ থেকে শুটিং শেষে দেশে ফিরে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুর সঙ্গে আড্ডায় মত্ত ছিলেন জনপ্রিয় এক নায়িকা। ওই সন্ধ্যায় প্রভাবশালী এক প্রযোজক তার ডেরায় কামনা করেছিলেন নায়িকাকে।
কিন্তু অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে চেপে যান নায়িকা। তারকার ড্রাইভার প্রযোজককে খবর দিয়ে দেন রাতের আড্ডার। প্রযোজক দলবল নিয়ে হাজির হোটেলে। বিব্রত নায়িকা। প্রযোজকের যে সহযোগিতার হাত নায়িকার কাঁধে এতদিন ছিল সেটা পরিণত হয় চপেটাঘাতে! ঠাস!
উঠতি নায়িকা আরশি হালে তার ড্রাইভারকে বিদায় করে দিয়েছেন। জানিয়েছেন, নতুন ড্রাইভার নেবেন না আর। নিজেই বসছেন ড্রাইভিং সিটে। কারণ হিসেবে নায়িকা জানান, আমার তথ্য আমার চেয়ে বেশি জানে পাড়া-পড়শিরা, আর তথ্য পাচারকারী ছিল আমার ড্রাইভার।
ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে হাঁড়ির খবর প্রকাশ নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরে এই রেওয়াজ চলে আসছে মিডিয়ায়। প্রায় এক দশক আগে চিত্রনায়িকা রোমানা আর রেসির ড্রাইভার ও সহকারীকে মাসিক বন্দোবস্তে সব খবরা খবর মুঠোবন্দি করতেন ডিপজল।
এমনকি নায়িকাদ্বয়ের কললিস্ট বের করে অভিনেতা-প্রযোজকের ক্ষমতা জাহির করতেন তিনি। সম্প্রতি এই ধারা নতুন করে বেগবান হয়েছে।
নিয়মিত মোটা দাগের টিপস দিয়ে প্রযোজক পরিচালক এমনকি মিডিয়াবান্ধব ব্যবসায়ীরা নায়িকা-গায়িকাদের গোপন তথ্য জেনে নিচ্ছেন ড্রাইভার-সহকারী-কাজের লোক-দারোয়ানদের কাছ থেকে।
নায়িকা-গায়িকাদের কাজের লোককে কোনো কারণে বিদায় করে দিলে তারা নিজেরাই হাজির হচ্ছেন তারকার সাবেক প্রেমিক অথবা গডফাদারের দরজায়। সেলামির অর্থের বিনিময়ে জানিয়ে দিচ্ছেন কিভাবে তারকা ঠকিয়েছেন তার প্রেমিক বা গডফাদারকে।
তারকাদের চাইলেই এখন আর সহসা পাওয়া যায় না ফোনে। উঠতিদের পাওয়া গেলেও তাদের ভাবভঙ্গিমা অন্যরকম। শিডিউল টাইট। অবস্থা এমন যে, মনে হয় দেশের সব ছবি, নাটক আর গান তিনি একাই করছেন।
আদতে যে তারা বেকার বসে আছেন, তা জানা যায় তাদের সহকারীদের কাছ থেকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক তারকা নায়িকার ড্রাইভার বললেন, ‘পেটে বাচ্চা নিয়ে ম্যাডাম গাড়িতে বসে এক সাংবাদিককে মোবাইলে বলছিলেন-বিয়ের চিন্তা আপাতত আমার মাথায় নেই।’
কিছুদিন আগে এক গায়িকার বিতাড়িত মহিলা সহকারী জানান, তার ম্যাডাম দেশ-বিদেশের ট্যুরে গানের জন্য গেলে দুই ধরনের কন্ট্রাক্টে যান। কন্ট্রাক্টের বিস্তারিত বর্ণনা অন্য কোনো সংখ্যায় বিস্তারিত প্রমাণপত্রসহ প্রচার করা হবে।
হালে অধিকাংশ তারকা নায়িকা-গায়িকার সহকারী বা ড্রাইভার অথবা দারোয়ান কোনো না কোনোভাবে তথ্যপাচারের সঙ্গে জড়িত। রঙিন জগতে নজরদারিতে জানা গেছে, মাসিক মাসোহারা নিয়ে অথবা সময়-সুযোগে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কল্যাণে পাচার করা হচ্ছে অতি গোপনীয় তথ্য ভান্ডারের বিস্তারিত পসরা।
সুতরাং একান্ত ব্যক্তিগতদের বিষয়ে আরও সতর্কতা অবলম্বন না করলে আগামীতে সাধুর এ সাবধান বাণী আফসোসে পরিণত হবে। সূত্র- বলা না বলা।